শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৯ অপরাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্ক: স্মার্টফোন এখন প্রায় সকলেরই প্রিয় অনুষঙ্গ। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে এক মুহূর্তের জন্যও মুঠোফোনকে হাতছাড়া করতে চান না অনেকেই। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ প্রবণতা আরো বেশি। পড়াশোনা শিকেয় তুলে অনেকেই ব্যস্ত থাকেন স্মার্টফোন নিয়ে।
তবে এবার গবেষকেরা জানালেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা দিনে পাঁচ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তাঁদের মুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। গবেষকদের বর্ণিত অন্যান্য উপসর্গগুলো থাকলে একজন শিক্ষার্থী হৃদরোগেও ভুগতে পারেন।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গবেষকেরা কলম্বিয়ার এক হাজার ৬০ জন শিক্ষার্থীর ওপর গবেষণা পরিচালনা করেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭০০ জন মেয়ে ও ৩৬০ জন ছেলে ছিল। তাঁদের প্রত্যেকের বয়স ছিল ১৯ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।
কলম্বিয়ার সিমন বলিভার ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, গবেষণা-নিবন্ধের প্রধান লেখক মিরারি মন্টিলা-মরন বলেছেন, ‘এটি সর্বসাধারণের জানা উচিত ও সচেতন হওয়া দরকার যে, সহজে বহনযোগ্য, অবিরাম সেবা, তথ্য ও বিনোদনের উৎসসহ নানাবিধ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য নিঃসন্দেহে মুঠোফোন আকর্ষণীয় হওয়া সত্ত্বেও স্বাস্থ্যকর আচরণ ও অভ্যাস উন্নয়নে মুঠোফোন প্রযুক্তি ব্যবহার হওয়া উচিত।’
নিবন্ধে বলা হয়, দিনে পাঁচ ঘণ্টা বা তার বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় ৪৩ শতাংশ। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা অবশ্য এর সঙ্গে চিনিযুক্ত পানীয়, ফাস্ট ফুড, মিষ্টি, স্ল্যাকস গ্রহণ করেন এবং কম শরীরচর্চা করেন।
গবেষকেরা জানান, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যাঁরা দিনে পাঁচ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তাঁদের ২৬ শতাংশের ওজন অতিরিক্ত ও ৪.৬ শতাংশ স্থূলকায়।
নিবন্ধে আরো বলা হয়েছে, অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার কর্মবিমুখ করে তোলে, তাতে শারীরিক কর্মকাণ্ডের মাত্রা কমে যায়, যা অকালমৃত্যু, ডায়বেটিস, হৃদরোগ ও বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের কারণ হতে পারে।
দিল্লির নিকটবর্তী শহর নয়ডার জয়পি হাসপাতালের সার্জিক্যাল গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের ডা. রাজেশ কাপুর বলেন, স্মার্টফোন ব্যবহার এখন আর বিলাসিতা নয়, প্রয়োজনীয়তা। কিন্তু এর অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাস্থ্যকর জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
বার্তা সংস্থা আইএএনএসকে রাজেশ বলেন, ‘মুঠোফোন ব্যবহারের সময় কমিয়ে আনতে নিজেকে উৎসাহিত করা উচিত, সেইসঙ্গে যোগব্যায়াম বা অন্যান্য শারীরিক ব্যায়ামে নিজেকে সম্পৃক্ত করা উচিত।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাঁচ ঘণ্টা বা কী পরিমাণ সময় স্মার্টফোনে ব্যয় হলো সে প্রশ্ন নয়, প্রশ্ন হচ্ছে একজন ব্যক্তি কতটুকু সময় শারীরিকভাবে সক্রিয়। অতিমাত্রায় মুঠোফোন ব্যবহার শরীরচর্চা থেকে দূরে রাখে। তাই মুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।